চকরিয়া পৌর শহররক্ষা বাঁধ এলাকার গনী সিকদারপাড়া গ্রামের বসতঘর,আবাদি জমি ও বিদ্যুত লাইনের খুটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
চকরিয়ায় বন্যার তান্ডবে বর্তমানে নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে পৌরশহর রক্ষা বাঁধ ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়া পয়েন্টের বেড়িবাঁধ। মাতামুহুরী নদীতে ঢলের পানি প্রবাহ কমে যাওয়ার পর থেকে দুই তীরে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গনের মহোৎসব। ইতোমধ্যে গত কয়েকদিন আগে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে চকরিয়া পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের শহররক্ষা বাঁধ এলাকার গনী সিকদারপাড়া গ্রামের অন্তত ১২টি বসতঘর ও বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি। বর্তমানে নদীতে হেলে পড়েছে ৬টি বিদ্যুত লাইনের খুটি।
স্থানীয় ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জরুরী প্রকল্পের আওতায় টেকসই উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে দ্রত সময়ে ভাঙ্গন এলাকাটি রক্ষা করা না গেলে চলতি বর্ষা মৌসুমে নদীতে বিলীন হয়ে যাবে পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ড ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের অন্তত ১২টি গ্রামের জনবসতি, রাস্তা-ঘাট, মসজিদ মাদরাসা, স্কুল ও মন্দিরসহ একাধিক স্থাপনা। পাশপাশি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হলে যে কোন মুহুর্তে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নদী গর্ভে তলিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে উপজেলার ফাসিয়াখালী ও চকরিয়া পৌরসভার অন্তত লক্ষাধিক জনগনের মাঝে নদী ভাঙ্গন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
চকরিয়া পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাতামুহুরী নদী থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে যাওয়ার পরপর ইতোমধ্যে নদীর তীর এলাকায় তাঁর ওয়ার্ডের গনী সিকদারপাড়া গ্রামের ১২টি বসতঘর, আবাদি জমি ও কয়েকটি সমিল নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বাড়ি-ভিটা হারানো স্থানীয় জসিম উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, আবু তালেব, নুর মোহাম্মদ, নুরুল আবছার, আমির হোসেন, নুরুল হোসেন, গুরা মিয়া, সামসুল আলম, ছৈয়দ নুর ও ছৈয়দ আলমসহ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলো সব হারিয়ে পরিবার সদস্যদের নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
শনিবার বিকালে ক্ষতিগ্রস্থ নদী ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশন করেছেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নদীতে ভাঙ্গনের শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে চকরিয়া শহররক্ষা বাঁধ এলাকার অন্তত ১২টি বসতঘর ও ৬টি বিদ্যুত লাইনের খুটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থার উত্তোরণের লক্ষ্যে আমরা পাউবোর পক্ষ থেকে জরুরী ভিত্তিতে নদীতে স্পার বসানো শুরু করেছি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে হলে ভাঙ্গন এলাকায় আরো স্পার বসানো হবে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ভাঙন এলাকা পরিদর্শনকালে এসময় উপস্থিত ছিলেন পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.ইমান আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ আ.ক.ম গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়া বেগম শম্পা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছরওয়ার আলম, সহ-সভাপতি মোক্তার আহমদ চৌধুরী, এমআর চৌধুরী, ছৈয়দ আলম কমিশনার, যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মিজবাউল হক, ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক সফিউল আলম বাহার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা তাকে বিন সগীর, চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ এহেছান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাফর আলম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে চকরিয়া শহররক্ষা বাঁেধর ঝুঁিকপুর্ণ এলাকায় ইতোমধ্যে নদীতে স্পার বসানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করা হয়। তিনি বলেন, নদীর তীর এলাকার জনগনের স্বাভাবিক বসবাস নিশ্চিত করতে আগামীতে চকরিয়া শহর রক্ষা বাঁধ ও ঘুনিয়া পয়েন্টের বেড়িবাঁধ দুটি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের উর্ধ্বতন মহলে সবধরণের চেষ্ঠা করা হবে।
পাঠকের মতামত: